সীরাতুন্নাবী (সা.) ::::: এপ্রিল – ’১২

একনজরে

রাসূলুল্লাহর (সা.)-এর

মহান জীবন

মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম

 

নবুওয়্যাতপূর্ব ৪০ বছর

 ৫৭০ খৃ. ৫ মে, ১২ রবিউল আউয়াল /মতান্তরে ৫৭১ খৃ. ২০ এপ্রিল, ৯ রবিউল আউয়াল : সোমবার সুবহে সাদিকের সময় মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশের হাশেমী গোত্রে রাসূলে কারীম (সা.)-এর জন্ম হয়।

১৫দিন পর :  দুধপান, বিশুদ্ধ আবহাওয়ায় লালন-পালন ও পরিশুদ্ধ ভাষাজ্ঞান রপ্তের জন্য বনু সা‘দ গোত্রের হালিমা সাদিয়ার নিকট তাঁকে অর্পন করা হয়।

৫৭২ খৃ. (বয়স : ২ বছর) : দুধপান শেষে মা আমিনার কাছে প্রত্যাবর্তন। বরকত লাভের আশায় পুনরায় নেয়ার  আবেদন এবং মক্কায় সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে মা আমিনার সম্মতি।

৫৭৬ খৃ. (বয়স : ৬ বছর) : মায়ের সঙ্গে মদীনায় পিতার কবর যিয়ারত শেষে ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে মায়ের মৃত্যু। দাসী উম্মে আইমান মক্কায় নিয়ে আসেন। অতঃপর দাদা আবদুল মুত্তালিব কর্তৃক তাঁকে লালন-পালন।

৫৭৮ খৃ. (বয়স : ৮ বছর) : দাদার মৃত্যু। তখন চাচা আবু তালিব কর্তৃক তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ। তিনি আমৃত্য (রাসূলের ৫০ বছর বয়সকাল পর্যন্ত) ছায়ার মতো আশ্রয় দেন।

৫৮০ খৃ. (বয়স : ১০ বছর) : ২য়বার বক্ষ বিদীর্ণের ঘটনা সংঘটিত।

৫৮২ খৃ. (বয়স : ১২ বছর) : চাচা আবু তালিবের সঙ্গে সিরিয়ায় বাণিজ্য সফরে রওনা। পথিমধ্যে বুশরা নামক স্থানে খৃস্টানপাদ্রী  বুহাইরা কর্তৃক নবুওয়াতের ভবিষ্যৎবাণী এবং বুহাইরার সতর্কতামূলক পরামর্শে ফিরে আসা।
পরবর্তীতে ২০/২১ বছর বয়স পর্যন্ত চাচাদের সাথে ইয়ামান, সিরিয়া, জাআশা, জারাল, বাহরাইন প্রভৃতি বিখ্যাত বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোতে একাধিকবার সফর।

৫৮৪ খৃ. (বয়স : ১৪ বছর) : তীর কুড়িয়ে ও আগুন নির্বাপনের মাধ্যমে ৪র্থ ফুজ্জার যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং মানবাধিকার ও সমাজ সেবামূলক সংস্থা ‘হিলফুল ফুজুল’ গঠনে সক্রিয় অংশগ্রহণ। এর কার্যক্রম নবুওয়্যাত প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত সক্রিয় ছিল।

৫৯৪ খৃ. (বয়স : ২৪ বছর) : মক্কায় অভিজাত ধনাঢ্য মহিলা খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের (রা.) মালামাল নিয়ে সিরিয়া ও ইয়ামানে ২ বার বাণিজ্য সফর এবং অভাবিত লাভ অর্জন। সে সময় খাদীজার ভৃত্য সফরসঙ্গী মাইসারা কর্তৃক বাণিজ্যিক কুশলতা ও সততার ভূয়সী প্রশংসা।

৫৯৫ খৃ. (বয়স : ২৫ বছর) : বিশ্বস্ততা, দক্ষতা ও অনুপম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের খাতিরে মুগ্ধ হয়ে কিংবদন্তীপ্রতিম সতী-সাধ্বী নারী ৪০ বছর বয়স্কা খাদীজার পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব ও আবু তালিবের সম্মতিতে খাদীজার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। এটা খাদীজার ৩য় এবং নবীজীর প্রথম বিবাহ।

৬০৫ খৃ. (বয়স : ৩৫ বছর) : কা‘বা শরীফের সংস্কার কাজে প্রত্যক্ষ অংশ্রগ্রহণ এবং হাজরে আসওয়াদ স্থাপন বিবাদে তাঁর অভূতপূর্ব মীমাংসার ফলে অবশ্যম্ভাবী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে মক্কাবাসীদের রক্ষা, মক্কার অবিসংবাদিত মধ্যস্থতাকারীতে পরিণত। এ সময়ে বিশ্বস্ততা, আমানতদারী ও সত্যবাদিতার কারণে কৈশোরে প্রদত্ত আল-আমীন ও আস-সাদিক উপাধির বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ। ৫ বছরের চাচাতো ভাই আলী  (রা.)কে প্রতিপালনের সিদ্ধান্ত।

৬০৭ খৃ. (বয়স : ৩৭ বছর) : ৩ বছর ব্যাপিত হেরা গুহার ধ্যানমগ্নতা শুরু।

৬১০ খৃ. ( ৪০ বছর) : নবুওয়াতপ্রাপ্তির অল্প কিছুকাল পূর্বে ৩য় বার বক্ষ বিদারণ।

 

 নবুওয়্যাতের প্রথম ১৩ বছর – মক্কার জীবন

৬১০ খৃ. (বয়স : ৪০ পূর্ণ-৪১ শুরু; ১ম নবুওয়্যাত বর্ষ ) : ঠিক ৪০ বছর বয়স থেকে স্বপ্নের মাধ্যমে নবুয়াতের নিদর্শন পাওয়া শুরু। অতঃপর ১৭ আগস্ট, ২১ রামাজান সোমবার রাতে হেরা গুহায় ১ম প্রত্যক্ষ ওহী লাভ। (তখন রাসূল (সা.)-এর বয়স ছিলÑ৪০ বছর ৩ মাস ১২দিন।)

৬১০-৬১৩ খৃ. (বয়স : ৪০-৪৩; ১ম-৩য় নবুওয়্যাত বর্ষ) : গোপনে ইসলামের প্রচার। ৩ বছরে ৪০ থেকে ৫২ জনের ইসলাম গ্রহণ। সকাল-সন্ধ্যায় ২বার নামাযের নির্দেশ।

৬১৩ খৃ. (বয়স : ৪৩ বছর চলমান; ৩য় নবুওয়্যাত বর্ষ) : জুন মাসে প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের নির্দেশ (১৫ : ৯৪)। প্রথমে নিকট আত্মীয়দের ২টি জমায়েতে দাওয়াত দান ও আবু লাহাবের মৃদু বিরোধিতা, তারপর সাফা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে দাওয়াত ও আবু লাহাবের প্রস্তর নিক্ষেপ। আবু তালিবের নিকট কুরাইশদের বিচার প্রার্থনা, ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত।
এই বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে হজ্বের মৌসুমে হাজীদের নিকট কুরাইশদের বিরুদ্ধপ্রচারণা এবং তাদের বিমুখ করার চেষ্টা। হজ্ব শেষে সম্মিলিত ও চতুর্মুখী প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত।
প্রথমতঃ ঠাট্টা, বিদ্রুপ, উপহাস, গালি-গালাজ; দ্বিতীয়তঃ বিকৃত বর্ণনা, সন্দেহ সৃষ্টি, মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালানো, তৃতীয়তঃ কুরআনের বিপরীতে কাহিনী বর্ণনা ও যৌন প্রলোভন প্রদান, সবশেষে : সমন্বয় সাধনের প্রস্তাব।

৬১৪ খৃ. (বয়স : ৪৪ বছর চলমান; ৪র্থ নবুওয়াত বর্ষ) : জুলুম-নির্যাতন শুরু। রজব মাসে আবিসিনিয়াতে ১৬জন মুসলমানের ১ম হিজরত। তারপর ৮৩জনের হিজরত।

৬১৫ খৃ. (বয়স : ৪৫ বছর চলমান; ৫ম নবুওয়াত বর্ষ) : আবু জাহিল কর্তৃক সাফা পাহাড়ে ধ্যানরত রাসূলের (সা.) মাথায় প্রস্তরাঘাত। এতে চাচা হামজা কা‘বায় প্রবেশ করে আবু জাহিলকে শাস্তিদান এবং ইসলাম গ্রহণ।

৬১৫ খৃস্টাব্দ ৬ষ্ঠ নবুওয়াত বর্ষে বীর উমর (রা.) ২৭  বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন।

৬১৬-৬১৯ খৃ. (বয়স : ৪৬-৪৯ বছর; ৬ষ্ঠ-৯ম নবুওয়্যাত বর্ষ) : কুরাইশদের সামগ্রিক সামাজিক বয়কট।

৬১৯ খৃ. (বয়স : ৫০ চলমান; ১০ম নবুওয়াত বর্ষ) : বয়কট অবসানের কিছুদিন পর রজব মাসে চাচা আবু তালিব (৮০) ও রামাজান মাসে হযরত খাদীজার ৬৫ বছর বয়সে ইন্তিকাল। শাওয়াল মাসে সাওদা বিনতে জাম‘আকে বিবাহ।
আবূ যার গিফারীর ইসলাম গ্রহণ। যায়েদকে নিয়ে মক্কার ৬০ মাইল দক্ষিণে তায়েফে ইসলাম প্রচারের জন্য গমন এবং নির্মম অত্যাচারের শিকার।

৬২০ খৃ. (বয়স : ৫১ চলমান; ১১শ নবুওয়্যাত বর্ষ) : ২৭শে রজব ৪র্থ বার বক্ষ বিদীর্ণের ঘটনা সংঘটিত এবং মি’রাজে গমন। ৫ ওয়াক্ত নামাযের বিধান লাভ।
শাওয়াল মাসে আবু বকর (রা.)-এর কন্যা আয়িশা (রা.)কে বিবাহ। হজ্ব মৌসুমে হাজীদের মধ্যে ইসলামের বাণী প্রচার। মদীনার খাজরায গোত্রের ৬ জনের ইসলাম গ্রহণ।

৬২১ খৃ. (বয়স : ৫২ চলমান; ১২শ নবুওয়্যাত বর্ষ) : হজ্ব মৌসুমে ১২জন মদীনাবাসীর আকাবার ১ম শপথ।

৬২২ খৃ. (বয়স : ৫৩ চলমান; ১৩শ নবুওয়াত বর্ষ) : আকাবার ২য় শপথ। হজ্বের সময় মদীনার ৭৩ জন পুরুষ ও ২জন মহিলার রাত্রে গোপনে আকাবায় ইসলাম গ্রহণ। অতঃপর ইসলামের খিদমত করার শপথ এবং হিজরতের আহ্বান।
সেই সূত্রে মক্কার সকল সক্ষম মুসলমানদের দলে দলে মদীনায় গমন। শুধু হযরত আলী (রা.) ও হযরত আবু বকর (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে মক্কায় থেকে যান।
অতঃপর ৬২২ খৃস্টাব্দ ১৪ই সেপ্টেম্বর, শনিবার রাসূলুল্লাহ (সা.) হিজরত করলে শিকার হাতছাড়া হয়ে যাবে এ আশংকায় আবু জাহিল সকল গোত্রের একজন করে সাহসী ও শক্তিশালী যুবক নিয়ে “হত্যাকারী সংঘ” গঠন করে একত্রে তরবারীর আঘাতে মহানবী (সা.)কে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু মহানবী (সা.) শুধুমাত্র মানুষের আমানত ফিরিয়ে দেবার জন্য হযরত আলী (রা.)কে রেখে সকলের অগোচরে আবু বকর (রা.)কে সাথে নিয়ে হিজরতের উদ্দেশ্যে মক্কা ছেড়ে মদীনার দিকে রওনা হন।

 

নবুওয়াতের শেষ ১০ বছর – মদীনার জীবন

৬২২ খৃ. (বয়স : ৫৪ চলমান; হিজরী ১ম বর্ষ) : ২০শে সেপ্টেম্বর, ৮ রবিউল আউয়াল মহানবী (সা.) কুবায় পৌঁছেন। সেখানে ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ। ৫ অক্টেবর, ২৩ রবিউল আউয়াল জুমু‘আর নামায ফরজ হয়, বানু সালিম গোত্রে সর্বপ্রথম জুমু‘আর নামায আদায়। তারপর মদীনায় প্রবেশ ও বিপুল সংবর্ধনা।

৬২৩ খৃ. এপ্রিল, ১ম হি. শাওয়াল মাসে মসজিদে নববী নির্মাণ সম্পন্ন।
৭ মাস আবু আইয়ূব আনসারীর (রা.) বাড়ীতে অবস্থান করে মসজিদ সংলগ্ন স্বীয় নবনির্মিত বাসভবনে অবস্থান শুরু।

৬২৩ খৃ. (বয়স : ৫৫ চলমান; হিজরী ২য় বর্ষ) : আগস্ট=সফর মাসে মদীনার  ২০০ মাইল দূরে ‘আবওয়া’ নামক স্থানে বানু দুমরার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন।
জুমাদাস সানিয়া মাসে মদীনার ৯০ মাইল দূরে বানু মুদলিজের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন।

৬২৪ খৃ. জানুয়ারী=২ হি. রজব মাসে বিখ্যাত মদীনার সনদ রচনা এবং সকল গোত্র ও সম্প্রদায়ের সম্মতি ও স্বাক্ষর।
ফেব্রুয়ারী=শা‘বান মাসে মাসজিদুল আকসার পরিবর্তে মক্কার কা‘বার দিকে ক্বিবলার পরিবর্তন। নামাযে আযানের প্রবর্তন।
১৩ মার্চ=২য় হিজরী রামাজান মাসে ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধে কুরাইশদের চরমভাবে পরাজয় বরণ।
২৬ শে এপ্রিল=২য় হিজরী যীক্বা‘দাহ্ মাসে ইয়াহুদী গোত্র বানু কাইনুকাকে বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে ১৫দিন অবরোধ শেষে বহিষ্কার।

৬২৫ খৃ. (বয়স : ৫৬ চলমান; হিজরী ৩য় বর্ষ) : ২৩ মার্চ=৭ শাওয়াল উহুদ যুদ্ধ সংঘটিত। পরদিন যুদ্ধফেরত কুরাইশ বাহিনীর পুনঃ আক্রমণ রোধ করতে মুসলিম বাহিনীর হামরাউল আসাদ পর্যন্ত অগ্রসর। এতে ভীত হয়ে রওহা থেকে কাফিরদের পলায়ন।

৬২৫ খৃ. (বয়স : ৫৪ চলমান; হিজরী ৪র্থ বর্ষ) : আগস্ট=রবিউল আউয়াল রাসূলুল্লাহ (সা.)কে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়। সন্ধিচুক্তি ভঙ্গ করার কারণে ১৫দিন অবরোধের পর ইয়াহুদী বানু নাদীরকে মদীনা থেকে খাইবারে বহিষ্কার।

৬২৬ খৃ. জানুয়ারী=৪র্থ হিজরী, শা’বান  মাসে আবু সুফিয়ানের পূর্বের চ্যালেঞ্জ অনুযায়ী বদর প্রান্তে মহানবীর (সা.) মুকাবিলার জন্য পৌঁছলেও, মক্কা থেকে কিছুদূর অগ্রসর হয়ে আবু সুফিয়ানের ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় পলায়ন।

৬২৬ খৃ. (বয়স : ৫৮ চলমান; হিজরী ৫ম বর্ষ) : জুলাই=রবিউল আউয়াল সিরিয়ার নিকটবর্তী দাওমাতুল জান্দালে ১০০০ সাহাবী নিয়ে অভিযানে গমন। খবর পেয়ে শত্রুদের পলায়ন।

৬২৭ খৃ. ১০ জানুয়ারী=৫ হি. ২ শা’বান : মদীনার ২০০ মাইল দূরে রাসূলুল্লাহর (সা.) মুসতালিক গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা।
ইফকের ঘটনা সংঘটিত হয়। পর্দার বিধান অবতীর্ণ হয়।
শাওয়াল মাসে খন্দক বা পরিখার যুদ্ধ হয়। ইয়াহুদী, কুরাইশ ও বেদুঈন ত্রিশক্তির সম্মিলিত বাহিনীর মাসব্যাপী মদীনা অবরোধ। কিন্তু অভ্যন্তরীণ অনৈক্য ও প্রচ- ঝড়ের কবলে পড়ে তাদের পলায়ন।
জিলকদ মাসে খন্দক যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকের কারণে ইয়াহুদী গোত্র বানু কাইনুকা-কে ২৫দিন অবরোধের পর তাদের আত্মপমর্পণ। তাদের পুরুষ যোদ্ধাদের মৃত্যুদ- প্রদান।

৬২৭ খৃ. (বয়স : ৫৯ চলমান; হিজরী ৬ষ্ঠ বর্ষ) : খৃস্টানদের সাথে সন্ধি।

৬২৮ খৃ. ৪ মার্চ=৬ হি. শাওয়াল মাসে ঐতিহাসিক হুদাইবিয়া সন্ধি। যাকে পরবর্তী বিজয়ের দ্বার বলা হয়। ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিকট দূত মারফত পত্র প্রেরণ।

৬২৮ খৃ. (বয়স : ৬০ চলমান; হিজরী ৭ম বর্ষ) : মে=মুহাররম মাসে খাইবার অভিযান পরিচালনা ও বিজয় অর্জন।

৬২৯ খৃ. মার্চ=৭ম হি. শাওয়াল মাসে ২০০ সাহাবা নিয়ে উমরা হজ্ব পালন।

৬২৯ খৃ. (বয়স : ৬১ চলমান; হিজরী ৮ম বর্ষ) : সেপ্টেম্বর=জুমাদাল উলা মুতার যুদ্ধে লক্ষাধিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ৩০০০ মুসলমানের ৩দিন যুদ্ধের পর বিজয় অর্জন। যুদ্ধে বীরত্বের কারণে খালিদ বিন ওয়ালিদকে ‘সাইফুল্লাহ’ উপাধি প্রদান।

৬৩০ খৃ. ১৫ জানুয়ারী=৮ হি. ২১ রামাজান ১০,০০০ সাহাবী নিয়ে মক্কাভিযানে যাত্রা এবং রক্তপাতহীনভাবে মক্কা বিজয়। এটি ইতিহাসের একটি বিরল ঘটনা।
২৭ জানুয়ারী=৬ শাওয়াল হুনাইনের যুদ্ধে বিজয়।মার্চ=৮ যীকা‘দাহ্ তায়েফ বিজয়। সেখানকার লোকদের ইসলাম গ্রহণ।

৬৩০ খৃ. (বয়স : ৬২ চলমান; হিজরী ৯ম বর্ষ) : নভেম্বর=রজব ৪০,০০০ সাহাবী নিয়ে তাবুক অভিযান। রোমান স¤্রাট লক্ষাধিক সৈন্য নিয়ে অগ্রসর হয়েও ফিরে যায়।

৬৩০-৬৩১ খৃ.=৯ হি. প্রতিনিধি প্রেরণের বছর। ওমান, হাজরা মাউত, নাজরান, মাহবার, বাহরাইন প্রভৃতি অঞ্চলের প্রতিনিধি মদীনায় আসেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন।

৬৩২ খৃ. (বয়স : ৬৩ চলমান; হিজরী ১০ম বর্ষ) : ৩ ফেব্রুয়ারী=২৫ যীকা‘দাহ্ ১,১৪,০০০ সাহাবীসহ মক্কায় হজ্বে গমন।
৯ জিলহজ্ব=৮ মার্চ আরাফাতে বিদায় হজ্বের ভাষণ।

৬৩২ খৃ. (বয়স : ৬৪ চলমান; হিজরী ১১শ বর্ষ) : ২৮ মে=১২ রবিউল আউয়াল সোমবার দ্বিপ্রহরের পূর্বক্ষণে মহানবী (সা.)-এর ওফাত এবং আয়িশা (রা.)-এর ঘরে যেখানে তিনি ইন্তিকাল করেছেন সেখানেই সমাহিত হন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজি‘উন)

মহানবী (সা.)-এর পূর্ণ জীবনকাল : ৬৩ বৎসর ৪ দিন (২,২৩,৩৩০ দিন ৬ ঘন্টার মত)।

Related posts